আমাদের সম্পর্কে

টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর। টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড “রেজিস্টারার অফ জয়েন্ট স্টক কোম্পানি”-এর অধীনে নিবন্ধিত একটি পাবলিক কোম্পানি। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের শতভাগ মালিকানায় এবং উক্ত মন্ত্রণালয়ের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের নিয়ন্ত্রণে থাকা টেলিটক-এর প্রকৃত মালিক এই দেশের জনগণ। টেলিটক বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ফোন, টেলিটক আমাদের ফোন।

মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর হিসেবে টেলিটক দেশের জনগণকে মোবাইল ভয়েস, এসএমএস, ইন্টারনেট ডেটা সেবা প্রদান করে থাকে। দেশের বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের টেলিযোগাযোগ চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে টেলিটক সাশ্রয়ী মূল্যে বিভিন্ন টেলিকম পণ্য ও ডিজিটাল সেবা প্রদান করছে। রাষ্ট্রীয় মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর হিসেবে শুধুমাত্র মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ না করে দেশের সকল প্রান্তের জনগণকে আধুনিক টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসতে টেলিটক দেশের দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলসমূহে যেমন হাওর অঞ্চল, দ্বীপাঞ্চল, পার্বত্য ও উপকূলীয় অঞ্চলে মোবাইল নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কাজ করে যাচ্ছে। ই-গভর্নেন্সের মূল ভিত্তি হচ্ছে দেশের সকল জনগণকে একটি নিরবিচ্ছিন্ন ও আধুনিক টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসা। প্রতিনিয়ত মোবাইল নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের মাধ্যমে এবং নিত্যনতুন টেলিযোগাযোগ সেবা উদ্ভাবনের মাধ্যমে টেলিটক ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।

বহুজাতিক টেলিকম কোম্পানিসমূহের একচেটিয়া প্রভাব হ্রাসের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার টেলিটক প্রতিষ্ঠা করেছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সাশ্রয়ী মূল্যে টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানের মাধ্যমে টেলিটক বাজার প্রতিযোগিতা নিশ্চিতকরণে সক্ষম হয়েছে। শতভাগ দেশীয় জনবল দ্বারা পরিচালিত টেলিটক দেশের মোবাইল টেলিফোন খাতে বিপ্লব নিয়ে এসেছে এবং নানা সীমাবদ্ধতা মোকাবিলা করে টেলিটক তার লক্ষ্য অর্জনে কাজ করে যাচ্ছে।

টেলিটক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যঃ

বাংলাদেশ সরকার নিম্নোক্ত ৪ টি লক্ষ্য নিয়ে টেলিটক প্রতিষ্ঠা করেছিলঃ

  • দেশের জনগণকে সরকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মোবাইল টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদান করা।
  • প্রাইভেট ও পাবলিক সেক্টরের মধ্যে সুস্থ বাজার প্রতিযোগিতা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণ করা।
  • মোবাইল টেলিফোন নেটওয়ার্কের সুবিধাবঞ্চিত দেশের দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলসমূহে যেমন হাওর অঞ্চল, দ্বীপাঞ্চল, পার্বত্য ও উপকূলীয় অঞ্চলের জনগণকে টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদান করা।
  • সরকারের রাজস্ব আহরণের নতুন উৎস সৃষ্টি করা।
কোম্পানির তথ্যঃ

২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর কোম্পানি আইন-১৯৯৪ এর অধীনে দুই হাজার কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধন নিয়ে টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত হয় এবং উক্ত তারিখেই টেলিটক “কমেন্সমেন্ট অব বিজনেস” সার্টিফিকেট অর্জন করে। ২০০৫ সালের ৩১ মার্চ টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড এর ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু হয়।

নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণঃ

দ্রুত বর্ধনশীল মোবাইল টেলিযোগাযোগ চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে টেলিটক নিয়মিত নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করে চলছে। নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও ইতোমধ্যে দেশের ৬৪টি জেলা, ৪০২টি উপজেলাসহ বেশিরভাগ হাইওয়ে টেলিটকের কাভারেজের আওতায় এসেছে। এছাড়া দেশের প্রত্যন্ত ও দুর্গম হাওর, দ্বীপাঞ্চল, উপকূলীয় ও পার্বত্য অঞ্চলে টেলিটকের নেটওয়ার্ক স্থাপন এবং বিদ্যমান নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করণের কাজ চলছে।

টেলিটকের ডিজিটাল সেবাসমূহঃ

ভয়েস, এসএমএস ও ইন্টারনেট ডেটা সেবা ছাড়াও টেলিটক দেশের জনগণকে বিভিন্ন ভ্যালু এডেড সার্ভিস (ভ্যাস) ও সরকারের পক্ষে বিভিন্ন ডিজিটাল সেবা প্রদান করে আসছে। টেলিটকের ভ্যালু এডেড সার্ভিস (ভ্যাস) উইং প্রতিনিয়ত সরকারি সেবাসমূহ ডিজিটালকরণে কাজ করে যাচ্ছে।  টেলিটকের উল্ল্যেখযোগ্য ডিজিটাল সেবাগুলো হচ্ছেঃ

  • পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল ডিজিটালি প্রক্রিয়াকরণ, ওয়েবসাইট ও এসএমএস-এর মাধ্যমে সকল বোর্ড পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ, পরীক্ষার ফলাফল পুনমূল্যায়নের আবেদন গ্রহণ ও সকল শিক্ষা বোর্ডের পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল ডিজিটালি সংরক্ষণ।
  • স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি আবেদন অনলাইনের মাধ্যমে গ্রহণ ও প্রক্রিয়াকরণ।
  • নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ও বিকাশের মাধ্যমে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের বিল গ্রহণ।
  • দুর্যোগকালীন সময়ে জনগণকে তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানের লক্ষ্যে ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম “১০৯০” (টোল ফ্রি) চালুকরণ।
  • বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস করার জন্য বিনামূল্যে BDRen Distant Learning Platform ব্যবহারের সুযোগ প্রদান।
টেলিটকের Alljobs প্লাটফর্মঃ

ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বিসিএসসহ প্রায় সকল সরকারী চাকুরীর নিয়োগের আবেদন প্রক্রিয়া অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করছে টেলিটক। Alljobs নামে টেলিটকের একটি স্বতন্ত্র পোর্টাল রয়েছে যার মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি চাকুরীর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, আবেদন গ্রহণ, প্রক্রিয়াকরণ ও নিয়োগ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য প্রকাশের ব্যবস্থা করা হয়। উক্ত পোর্টালের মাধ্যমে চাকুরী প্রার্থীরা খুব সহজেই ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে চাকুরীর আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারছেন এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ার পরবর্তী পর্যায়ের তথ্য পাচ্ছেন। টেলিটকের মাধ্যমে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্নকারী কয়েকটি উল্ল্যেখযোগ্য সংস্থা হচ্ছেঃ

  • বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন
  • বাংলাদেশ পুলিশ
  • বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি
  • বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন
  • বাংলাদেশ রাজস্ব বোর্ড
  • বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ
  • বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়
  • বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ও কোম্পানি
টেলিটকের ভিশন (রুপকল্প) ও মিশন (অভিলক্ষ্য)

ভিশন (রুপকল্প) 

বাংলাদেশের সকল প্রান্তে বসবাসরত প্রত্যেক নাগরিকের জন্য মোবাইল  ভয়েস, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল সেবা সাশ্রয়ীমূল্যে প্রদান করা।

মিশন (অভিলক্ষ্য)

সারা দেশে নেটওয়ার্ক কভারেজ প্রদান ও উল্লেখযোগ্য মার্কেট শেয়ার অর্জনের মাধ্যমে টেলিটক বাংলাদেশের শীর্ষ স্থানীয় মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরদের মধ্যে অন্যতম হবে।